অপরাধের মার্জনা লাভের শ্রেষ্ঠ সময় এই মাহে রমজান

ঢাকার বাংলা মটর বাইতুল মোবারক জামে মসজিদের খতিব অধ্যাপক মাওলানা ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ বলেন, মহানবী (সা.) পবিত্র রমজান মাসকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন। প্রথম দশ দিন রহমতের, দ্বিতীয় দশ দিন মাগফিরাতের এবং শেষ দশ দিন নাজাতের। (বাইহাকি, হাদীস নং-৩৩৩৬)। রহমতের দশক আজ শেষ হতে চলেছে। শুরু হতে যাচ্ছে মাগফিরাতের দশক। মাগফিরাত শব্দের বাংলা অর্থ ক্ষমা। মহান আল্লাহর অসংখ্য গুনবাচক নামের একটি ‘আল-গাফুর’ অর্থাৎ ক্ষমাশীল। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। (সূরা হজ্জ আয়াত নং-৬০)।
খতিব বলেন, রমজান মাস আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে উম্মতে মুহাম্মাদীর জন্য এক মহা নিয়ামত। মহান আল্লাহর অনুকম্পা লাভের ও গুনাহ থেকে মুক্তির বার্তা নিয়ে আসে রমজান। সারা বছরেরকৃত অপরাধের মার্জনা লাভের শ্রেষ্ঠ সময় এই মাহে রমজান। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজান মাসে একজন আহ্বানকারী (ফেরেশতা) এই বলে আহ্বান করেন, হে কল্যাণ অনুসন্ধানকারীগণ! আল্লাহর কাজে আগ্রসর হও। হে পাপাচারী! (অকল্যাণ থেকে) থেমে যাও। এ মাসে আল্লাহ তায়ালাই মানুষকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত করেন এবং এটা রমজানের প্রত্যেক রাতেই হয়ে থাকে। (তিরমিযী, হাদীস নং-৬৮২)।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রমজানের রোজা পালন করে, তার পূর্বের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। (বুখারী, হাদীস নং-৩৮)। নবীজী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রমজানের রাতে কিয়ামুল লাইল করে তার পিছনের গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (বুখারী, হাদীস নং-২০০৮)। মালিক বিন হাসান তার পিতামহ হতে বর্ণনা করেন, একদা রাসুলুল্লাহ (সা.) মিম্বারে চড়েন। প্রথম ধাপে চড়েই বলেন, আমীন। এমনিভাবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে চড়েও আমীন বলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমার নিকট জিবরীল উপস্থিত হয়ে বললেন, হে মুহাম্মদ! যে ব্যক্তি রমজান পেল অথচ ক্ষমা প্রাপ্ত হলো না, আল্লাহ তাকে ধ্বংস করুন। তখন আমি (প্রথম) আমীন বললাম।
খতিব বলেন, করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে দেশে লকডাউন চলছে। যেকারণে দিনমজুর, পরিবহণ শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষদের কেউ কেউ অর্থাভাবে ভুগছেন, খাদ্যাভাবে পড়েছেন। এ অবস্থায় তাদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের প্রয়োজন পূরণে চেষ্টা করা আমাদের জন্য আবশ্যক। ইসলাম আমাদের এ শিক্ষাই দিয়েছে। অসহায় ক্ষুধার্থকে খাদ্য প্রদান করতে স্বয়ং আল্লাহ নির্দেশ করেছেন। মহান আল্লাহ আরও বলেন, নিশ্চয়ই মুমিনরা আল্লাহর প্রতি ভালোবাসার টানে খাদ্য দান করে অভাবী, ইয়াতিম ও কয়েদীদেরকে। (সূরা ইনসান, আয়াত নং-৮)। মহিমান্বিত এই রমজানে আল্লাহ আমাদের সকলের গুনাহ মাফ করুন অধিক পরিমাণে দান করার তৌফিক দান করুন। আমীন!