আযাব গজব থেকে বাঁচতে সমস্ত নাফরমানি ছাড়তে হবে

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মুহিউদ্দীন কাসেম বলেছেন, সর্ব ধরনের আযাব গজব ও বিপর্যয় থেকে বাঁচতে আল্লাহপাকের সমস্ত নাফরমানি ছাড়তে হবে, গুনাহ মুক্ত জীবন যাপন করতে হবে, সর্ব ধরনের পাপাচার পরিহার করে জীবন পরিচালনা করতে হবে। বর্তমান সময়ে একদিকে যেমন করোনাভাইরাসের মহামারি চলছে, সেই সাথে দেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়ছে। সুতরাং আমাদের সর্ব ধরনের গুনাহ ছাড়ার সাথে সাথে স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞগনের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। আজ (২৭ আগষ্ট) শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জুমার বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।
পেশ ইমাম বলেন, বিশেষ করে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে পরিষ্কার পরিছন্নতা দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং কোথাও যাতে নোংরা পানি জমে না থাকে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে হাদীস শরীফে অনেক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে৷ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাকে ঈমানের অর্ধেক বলা হয়েছে। সুতরাং আমরা সকলেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে লক্ষ্য রাখবো শারীরিক পরিছন্নতার সাথে সাথে অন্তর আত্মার পরিচ্ছন্নতার জন্য গুনাহমুক্ত জীবন যাপন করতে হবে। মনে রাখতে হবে আজকের এই বিপযয় আমাদেরই কৃতকর্মের ফল। কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, মানুষের কৃতকর্মের কারণে সমুদ্রে ও স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে তাদেরকে কোন কোন কর্মের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে। (সুরা রূম আয়াত ৪১)।
তিনি বলেন, কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে , তোমরা প্রকাশ্য পাপ কাজ পরিত্যাগ কর এবং পরিত্যাগ কর গোপনীয় পাপ কাজও। যারা পাপ কাজ করে তাদেরকে অতি সত্ত¡রই তাদের মন্দ কাজের প্রতিফল দেয়া হবে। (সুরা আনআম আয়াত ১২০)। বড় পাপ গুলো যেমন ছাড়তে হবে ছোটো পাপথেকেও বেচে থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে পাপ যেমনই হোক, তা পাপই। তাকে ছোট মনে করে তা করে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পরকালীন শাস্তির কথা ভেবে ক্ষুদ্র পাপ থেকেও বিরত থাকা উচিত। রাসুল সা. আয়েশা রা.-কে বলেছেন, ‘হে আয়েশা! তুমি ছোট ছোট গুনাহ থেকেও নিজেকে রক্ষা করো। কেননা সেটা লেখার জন্যও আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত আছেন।’ [মিশকাত, হাদিস : ৫৩৫৬]।
তিনি আরো বলেন, মহানবী সা. নেক মানুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে বলেছেন। তিনি বলেন, ‘তুমি মুমিন ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারো সঙ্গী হবে না এবং তোমার খাদ্য যেন পরহেজগার লোকে খায়।’ [আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৩২]। তাছাড়া বিগত সময়ের পাপের জন্য তাওবা করার অভ্যাস করে নিতে হবে। হাদিসে কুদসিতে আছে, ‘হে আদম সস্তান! তোমার গুনাহর পরিমাণ যদি আসমানের কিনারা বা মেঘমালা পর্যন্তও পৌঁছে যায়, তারপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, এতে আমি পরোয়া করব না। আল্লাহপাক আমাদেরকে গুনামুক্ত জীবন-যাপনে তৌফিক দান করুন। আমীন।