ইসলামে প্রতিবেশীর হককে অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে

মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী বলেছেন, মানব সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ প্রতিবেশী। ফলে ইসলামে প্রতিবেশীর হককে অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। প্রতিবেশী বলতে মুসলিম, কাফের, নেক বান্দা, ফাসেক, বন্ধু, শত্রু, পরদেশী, স্বদেশী, উপকারী, ক্ষতিসাধনকারী, আত্মীয়, অনাত্মীয়, নিকটতম বা তুলনামূলক একটু দূরের প্রতিবেশী, রাস্তাঘাটে চলার পথে সাময়িক প্রতিবেশী সবাই অন্তর্ভুক্ত। আজ (১৭ সেপ্টেম্বর) শুক্রবার ঢাকার মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের জুমার খুতবা পূর্ব বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।
মুফতি ফিরোজী বলেন, আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে সূরা নিসার ৩৬ নং আয়াতে বলেন, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং কোনো কিছুকে তার সাথে শরিক করো না। এবং পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্থ, নিকট-প্রতিবেশী, দূর প্রতিবেশী, চলার পথের সাময়িক সাথী, মুসাফির ও তোমাদের দাস-দাসীদের সাথে ভালো ব্যবহার কর। নিশ্চয় আল্লাহ দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। এ আয়াতের মধ্যে আল্লাহ তায়ালা তার ইবাদতের নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি তার সাথে কাউকে শরিক না করার কথা বলেছেন। সাথে সাথে উল্লেখ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের হক। তার মধ্যে রয়েছে মাতা-পিতার হক, আত্মীয় স্বজনের হক, এতীমের হক ইত্যাদি। এসব গুরুত্বপূর্ণ হকের সাথেই আল্লাহ তায়ালা প্রতিবেশীর হককে উল্লেখ করেছেন।এ থেকেই বোঝা যায়, প্রতিবেশীর হককে আল্লাহ কত গুরুত্ব দিয়েছেন এবং তা রক্ষা করা আমাদের জন্য কত জরুরি।
তিনি বলেন, প্রতিবেশীর হকের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জিবরীল আ. আমাকে প্রতিবেশীর হকের ব্যাপারে এত বেশি তাকিদ দিয়েছেন যে, আমার কাছে মনে হয়েছে প্রতিবেশীকে মিরাছের অংশীদার বানিয়ে দেয়া হবে। (বুখারী, হাদীস নং-৬০১৪)। কিন্তু আজকাল এ বিষয়ে আমাদের মাঝে চরম অবহেলা পরিলক্ষিত হয়। বিশেষ করে শহরের মানুষের মাঝে। বছরের পর বছর পার হয় পাশের বাড়ির কারো সাথে কোনো কথা হয় না, খোঁজ খবর নেয়া হয় না।
তিনি আরো বলেন, বরং বিভিন্নভাবে প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া হয়। অথচ প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ ও তাকে কষ্ট না দেয়াকে ঈমানের সাথে যুক্ত করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ করে। (মুসলিম, হাদীস নং-১৮৫)। আরেক হাদীসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। (মুসলিম, হাদীস নং-১৮৩)। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করুন আমীন।