ইসলামে মানবাধিকারের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান বলেছেন, শিশুকাল যৌবনকাল আর বার্ধক্য সবই আল্লাহ তায়ালার দান। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদের দুর্বলরূপে সৃষ্টি করেন, অতঃপর দুর্বলতার পর তিনি শক্তি দান করেন, শক্তির পর আবার দেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং তিনিই সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।’ (সুরা : রুম, আয়াত : ৫৪। ইসলামে মানবাধিকারের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সব ধরনের মানুষের অধিকার রক্ষা করেছে ইসলাম। আজ (১ অক্টোবর) শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের জুমার খুতবা পূর্ব বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।

পেশ ইমাম বলেন,  পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বৃদ্ধদের প্রতি যত্ন নেয়ার বিষয়ে রয়েছে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা। রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ মারা যায়, তখন তার আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে মুমিনের বয়স বৃদ্ধি তার প্রভূত কল্যাণই বয়ে আনে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৮২) । একবার মুআজ রা. নামাজে কেরাত লম্বা করেছিলেন। মুসল্লিরা অভিযোগ করলে নবীজি সা. বললেন, তুমি লম্বা কেরাত পড়ছ অথচ তোমার পেছনে মুরব্বি, বয়স্ক ব্যক্তি এবং দুর্বল শ্রেণির মানুষরাও নামাজ পড়ছে। (বুখারি, হাদিস : ৭০৫)।  ইসলাম বয়স্ক ব্যক্তিদের সেবাযত্নের প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, তোমার প্রতিপালক নির্দেশ দিয়েছেন যে তোমরা তাকে ছাড়া অন্য কারো উপাসনা করবে না এবং মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার করবে; তাদের একজন অথবা উভয়েই তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদের (বিরক্তিসূচক শব্দ) ‘উফ’ বলোনা এবং তাদের ভর্কোরো না; বরং তাদের সঙ্গে বলো সম্মানসূচক নম্র কথা। (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২৩)। পেশ ইমাম বলেন, আজ সমাজের সর্বস্তরে মাদকের বিস্তার লাভ করেছে। মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার জন্য এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ইসলাম মাদককে পরিপূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করেছে।

তিনি আরো বলেন, কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, পূজার বেদি ও ভাগ্য নির্ণায়ক শর ঘৃণ্য বস্তু, এগুলো শয়তানের কার্য। সুতরাং তোমরা তা বর্জন করো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো’ (সুরা-৫ মায়েদা, আয়াত: ৯০)। সর্বশেষে ঘোষণা করা হলো, ‘শয়তান তো মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রæতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে চায় এবং তোমাদিগকে আল্লাহর স্মরণে ও নামাজে বাধা দিতে চায়। তবে কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না?’ (সুরা-৫ মায়েদা, আয়াত: ৯১)। সাহাবি হযরত আনাস বিন মালিক রা. বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘কিয়ামতের কিছু নিদর্শন হলো ইলম লোপ পাবে, অজ্ঞানতার বিস্তার ঘটবে, মদ্যপান ও মাদকের প্রসার ঘটবে, ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়বে’ (বুখারি, প্রথম খণ্ড, হাদিস: ৮০)। মাদকের বিষাক্ত ছোবল থেকে আমাদের সমাজকে বাঁচাতে শুধু মাদক ব্যবসায়ী নয়, মাদকসেবীদের বিরুদ্ধেও অভিযান চালাতে হবে। তাদের মধ্যে আল্লাহভীতি তৈরি ও ধর্মীয় জীবনযাপনে অভ্যস্ত করাতে হবে। শুধু ইয়াবা নয়, নেশাজাতীয় সকল দ্রব্যের উৎপাদন ও বেচাকেনা নিষিদ্ধ করতে হবে।

বিস্তারিত পড়ুন

সম্পর্কিত পোস্ট

Back to top button
error: Content is protected !!