ইসলাম নীতি-আদর্শ এবং মানবিকতার ধর্ম
মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী বলেছেন, পরকীয়া। ছোট একটি শব্দ। কিন্তু এর ক্ষতি ও পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ এবং মারাত্মক। এটা বিকৃত মানসিকতার কাজ। সুস্থ মস্তিষ্কের কোন নারী-পুরুষ পরকীয়ায় লিপ্ত হতে পারে না। ইসলাম নীতি-আদর্শ এবং মানবিকতার ধর্ম। ইসলামে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, যেনা, পরকীয়ার কোন স্থান নেই। ইসলাম বিবাহের মাধ্যমে বৈধ পন্থায় নারী-পুরুষের মেলামেশার সুযোগ দিয়েছে। আর পরকীয়া-ব্যভিচারসহ নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশাকে কঠোরভাবে নিষেধ করে চরিত্র সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে। আজ (২৭ আগষ্ট) শুক্রবার রাজধানীর মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।
মুফতি ফিরোজী বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : ৩২)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরকীয়া-ব্যভিচারের ভয়াবহ শাস্তির কথা বর্ণনা করে বলেন, ‘হে মুসলমানগণ! তোমরা ব্যভিচার ছেড়ে দাও। কেননা এর ছয়টি শাস্তি রয়েছে। তিনটি দুনিয়াতে এবং তিনটি আখেরাতে দেয়া হবে। যে তিনটি শাস্তি দুনিয়াতে হবে তা হচ্ছে, তার চেহারার উজ্জ্বল্য নষ্ট হয়ে যাবে, তার আয়ুষ্কাল সঙ্কীর্ণ হয়ে যাবে এবং তার জীবনে দারিদ্রতা চিরস্থায়ী হবে। আর যে তিনটি শাস্তি আখেরাতে প্রকাশ পাবে তা হচ্ছে, সে আল্লাহর অসস্তোষ, কঠিন হিসাব ও জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে।’ (বায়হাকি : ৫৬৪)। হযরত সাহল ইবনে সাদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি মুখ ও লজ্জাস্থানের হেফাজতের জামিনদার হবে আমি তার বেহেশতের জামিনদার হবো।’ (বুখারি : ৭৬৫৮)।
তিনি আরো বলেন, আমাদের সমাজে ব্যাপকহারে পরকীয়া, লিভটুগেদারসহ নানাবিধ হারাম সম্পর্ক গড়ে উঠছে। শহর কিংবা গ্রাম সবখানেই চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে পর্দার অমোঘ বিধান। এজন্য পরপুরুষ বা পরনারীদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিত। হযরত উকবা ইবনে আমের রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সাবধান, তোমরা নির্জনে নারীদের কাছেও যেও না।’ এক আনসার সাহাবি বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, দেবর সম্পর্কে আপনার নির্দেশ কী?’ উত্তরে নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘দেবর তো মৃত্যুর সমতুল্য অর্থাৎ তার সাথেও দেখা দেয়া সম্পূর্ণ হারাম।’ (মুসলিম : ২৪৪৫)। তাই আসুন, আমরা পরকীয়া এবং যাবতীয় হারামমুক্ত জীবন গড়ি। আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদেরকে সেই তাওফিক দেন। আমীন।