এবার বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ছাড়ল খেলাফত মজলিস

এবার বাংলাদেশ জাতীয়তবাদী দল-বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ত্যাগ করল খেলাফত মজলিস। আজ (১ অক্টোবর) শুক্রবার রাজধানীর বাদ জুমা পুরানা পল্টনের কালভার্ট রোডস্থ সিগাল রেস্টুরেন্টে কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার বিশেষ অধিবেশন শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে জোট ছাড়ার ঘোষণা দেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন।এর আগে শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিজয়নগরস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে, চলতি বছরের ১৪ জুলাই বিকালে রাজধানীর পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে জোট ছাড়ার ঘোষণা দেয় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের একাংশ।এরআগে ২০১৯ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন এই জোট ছেড়েছিল আন্দালিভ রহমান পার্থের বিজেপি।
লিখিত বক্তব্য ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, খেলাফত মজলিস একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতির প্রয়ােজনে সর্বদা সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-সংগ্রামে খেলাফত মজলিস বিশ্বাসী। একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন হিসেবে দীর্ঘ তিন দশকেরও অধিক সময় রাজনৈতিক অঙ্গনে দেশ, জাতি, ইসলাম ও জনগণের পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে আসছে। খেলাফত মজলিস মনে করে, দেশের প্রতিটি নাগরিকের রাজনৈতিক মতাদর্শ লালন ও পালন করার অধিকার আছে। যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানেও স্বীকৃত। একটি সরব-সক্রিয় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে খেলাফত মজলিসের রাজনৈতিক কর্মকৌশল সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় সময়ে সময়ে পর্যালােচনা করে, দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা প্রয়ােজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে।
বিগত ২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত মজলিসে শূরার অধিবেশনে ২০ দলীয় জোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, পরবর্তী সিদ্ধান্তের পূর্ব পর্যন্ত খেলাফত মজলিস জোটের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ না করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। সে অনুযায়ী দীর্ঘ দুই বছরের অধিক সময় ধরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আসছে।রাজনৈতিক জোট ইস্যু কেন্দ্রিক গঠিত হয়। জোট কোন স্থায়ী বিষয় নয়। খেলাফত মজলিস ২০ দলীয় জোটে দীর্ঘ ২২ (বাইশ) বছর যাবত আছে। ২০১৯ সাল থেকে ২০ দলীয় জোটের দৃশ্যমান রাজনৈতিক তৎপরতা ও কর্মসূচী নেই। ২০১৮ সালে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের মধ্য দিয়ে ২০ দলীয় জোটকে কার্যত রাজনৈতিকভাবে অকার্যকর করা হয়।
এমতাবস্থায় আদর্শিক, সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায়, ২০১৯ সালের মজলিসে শূরায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খেলাফত মজলিস আজকের মজলিসে শূরার অধিবেশনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে- খেলাফত মজলিস একটি আদর্শিক রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে স্বকীয়-স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে ময়দানে ভূমিকা রাখবে এবং এখন থেকে ২০ দলীয়। জোটসহ সকল রাজনৈতিক জোটের সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করছে। আরাে উল্লেখ্য যে, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সংগঠনের মহাসচিব বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক, গবেষক ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ কারারুদ্ধ জননেতা ড. আহমদ আবদুল কাদের-এর অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবী জানায়। একই সাথে গ্রেফতারকৃত উলামায়ে কেরাম ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের আশু মুক্তির দাবীও করে। সবাইকে ধন্যবাদ।
দেশের সবচেয়ে প্রবীণ রাজনীতিবিদ খেলাফত মজলিসের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাকের সভাপতিত্বে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইনের সঞ্চালনায় প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র নায়েবে আমীর, অধ্যাপক মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী, নায়েবে আমীরহাফিজ মাওলানা মজদুদ্দিন আহমদ, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল হালিম, যুগ্মমহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, এবিএম সিরাজুল মামুন, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মো: আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা তোফাজ্জাল হোসাইন মিয়াজী, এডভোকেট মিজানুর রহমান, মুহাদ্দিস শেখ মুহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, প্রশিক্ষণ ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা শামসুজ্জামান চেীধুরী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: শরীফ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক- অধ্যাপক আবু সালমান, উলামা বিষয়ক সম্পাদক মুফতি ওযায়ের আমীন, সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফয়জুল ইসলাম, সহ- প্রচার, তথ্য ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক- প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হক, উত্তরের সভাপতি অধ্যাপক ডা. আরএইচ রিফাত দক্ষিণের সভাপতি এডভোকেট তাওহিদুল ইসলাম তুহিন, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা সাইফ উদ্দিন আহমদ খন্দকার প্রমুখ।