গণকমিশন মূলত গণমানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে : শায়খ আহমাদুল্লাহ
জঙ্গি অর্থায়ন ও দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে কাজ করছে এমন অভিযোগ এনে ১১৬ ওয়ায়েজিনের নামের তালিকা দুদকে জমা দেয়া ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সমন্বয়ে গঠিত গণকমিশনকে ‘ভুইফোঁড়’ বলে তাদের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, সত্যিকারের গণমানুষের সমাবেশ বলতে যা বুঝায় এদেশের ওয়াজ মাহফিলগুলো তার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এমন স্বতঃস্ফূর্ততা অন্য কোনো গণজমায়েতে বিরল। কোনোরূপ পার্থিব স্বার্থ ছাড়া এই সমাবেশগুলোতে হাজার হাজার নয়, বরং লাখো মানুষ স্বপ্রণোদিতভাবে অংশগ্রহণ করে এবং যাওয়ার আগে পকেটের টাকা দিয়ে আয়োজনের সহযোগী হয়ে যায়।
যে কোনো বড় সমাগমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বিপুল পরিমাণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হয়। ব্যতিক্রম ওয়াজ মাহফিল। হাজারো মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা শান্তিপূর্ণভাবে উপস্থিত থেকে কুরআন-সুন্নাহর আলোচনা শোনেন। ওয়ায়েজরা যদি শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার মতো বক্তব্য দিতেন, তাহলে শান্তিপূর্ণভাবে ওয়াজ মাহফিল হতো না।
দরিদ্র ও শিক্ষিতের হার কম সত্ত্বেও এদেশে অপরাধ প্রবণতা যেটুকু নিয়ন্ত্রণে আছে তার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি এদেশের মসজিদ ও মাহফিলের মিম্বরগুলোর ভূমিকাও অনস্বীকার্য। বরং উলামায়ে কেরামকে এর নেপথ্য নায়ক বলা যায়। তাঁরা ঈমান-আমল, সচ্চরিত্র ও নীতি-নৈতিকতা সম্পর্কে নিয়মিত আলোচনা করেন। এর ইতিবাচক প্রভাব আমাদের সমাজে রয়েছে।
গুটিকয় বক্তা-বিশেষের অসংস্কৃত ও অসৌজন্যমূলক আচরণ-উচ্চারণের সমালোচনা সব শ্রেণি-ঘরানার বিজ্ঞ আলেমরা করেন; তাঁরা সবসময় করবেন।
কিন্তু তথাকথিত গণকমিশন যে ১১৬ আলেমের কথিত তালিকা প্রকাশ করেছে তা যুগ যুগ ধরে চলে আসা গণমানুষের এই পবিত্র জমায়েতকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা মাত্র। নানা সময়ে অনিয়ম, উচ্ছৃঙ্খলতা, উগ্রতা ও নৈতিক স্খলনের জন্ম দেওয়া বিতর্কিত লোকদের দ্বারা গঠিত তথাকথিত গণকমিশন মূলত গণমানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
আমরা মনে করি এর মধ্য দিয়ে এই ভূঁইফোড় সংগঠনটির কর্তা-ব্যক্তিদের ইসলাম-বিদ্বেষী চেহারাই উন্মোচিত হয়েছে। তাদের বিগত দিনের কর্মকাণ্ড ও কথাবার্তা এর প্রমাণ। এদেশের দীনি শিক্ষা-ব্যবস্থা, আলেম-উলামা ও ওয়াজ মাহফিলের বিরুদ্ধে চিহ্নিত একটা শ্রেণি প্রায়ই বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করে। আমরা মনে করি, এটি তারই ধারাবাহিকতা মাত্র।
এর মধ্য দিয়ে তারা এদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলে আমাদের প্রবল সন্দেহ। তাদের এই হীন চেষ্টা বুমেরাং হবে ইন-শা-আল্লাহ।