প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজনের অভাব পূরণের চেষ্টা করতে হবে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং কবি জসিম উদ্দিন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মাওলানা ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ বলেছেন, আরবি ‘কোরবান’ ও ‘কোরবাতুন’ শব্দের অর্থ হচ্ছে নৈকট্য লাভ করা, নেক আমল দ্বারা মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা। বাংলা ভাষায়, ‘কোরবানি’ মানে ত্যাগ, উৎসর্গ করা, পশু কোরবানির মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। আল্লাহর নৈকট্য অর্জনকল্পে কোরবানির দিনে যে পশু জবাই করা হয়, তারই নাম ‘কোরবানি’। একই কারণে কোরবানির দিনকে ‘ইয়াওমুল-আদ্বহা’ ও কোরবানির ঈদকে ঈদুল-আদ্বহা বলা হয়। আজ (১৬ জুলাই) শুক্রবার ঢাকার বাংলা মটরস্থ বাইতুল মোবারক জামে মসজিদে জুমার বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ বলেন, হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রা. বলেন, রাসুল সা. বলেছেন, আদম সন্তান কোরবানির দিন যত নেক আমল করে তার মধ্যে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল হচ্ছে (পশু কোরবানির মাধ্যমে) রক্ত প্রবাহিত করা। কিয়ামতের দিন কোরবানির পশু (জীবিত হয়ে) তার শিং, খুর এবং পশম সহকারে উঠবে। কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই আল্লাহর দরবারে তা কবুল হয়ে যায়। বিখ্যাত সাহাবি হযরত জায়েদ ইবনে আরকাম রা. বলেন, একদিন সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! এই কোরবানি কি? হুজুর সা. উত্তর দিলেন, তোমাদের পিতা হযরত ইবরাহিম আ.-এর সুন্নাত (নিয়ম)। তারা পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, হে রাসুল! এতে আমাদের জন্য কি রয়েছে? হুজুর সা. বললেন, কোরবানির পশুর প্রতিটি পশমের পরিবর্তে একটি করে নেকি রয়েছে। তারা আবার জিজ্ঞাসা করলেন, হে রাসুল! পশমওয়ালা পশুদের (অর্থাৎ যেসব পশুর পশম বেশি হয় যেমন ভেড়া ইত্যাদির) পরিবর্তে কি সওয়াব পাওয়া যাবে? হুজুর সা. বললেন, পশমওয়ালা পশুর প্রতিটি পশমের পরিবর্তে একটি করে নেকি রয়েছে (চাই পশম যত বেশিই হোক না কেন)। (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ)। প্রিয়নবী সা. বলেন, হে লোক সকল! জেনে রাখ তোমাদের প্রত্যেক (সামর্থ্যবান) পরিবারের পক্ষে প্রতি বছরই কোরবানি করা আবশ্যক। (আবু দাউদ, নাসায়ী)
তিনি আরো বলেন, আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে সমাজের প্রতিটি মানুষের কাছেই ঈদের খুশী পৌঁছে যায়। পথশিশু, দিনমজুর, গরীব, দুঃখী, অসহায় কেউ যাতে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয়। এ ব্যপারে আমাদের সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন কেউ যদি অভাবে থাকে, তার অভাব পূরণের আমাদের চেষ্টা করতে হবে। ঈদের দিনে সবাই যাতে আনন্দচিত্তে এ দিনটি উদযাপন করতে পারে সে ব্যপারে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন, যাবতীয় বিপদাপদ থেকে রক্ষা করুন। আমীন।