প্রস্তাবিত ববাজেটে সাধারণ জনগণের জন্য ভালো কিছু নেই : মাওলানা ইসহাক

খেলাফত মজলিসের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক বলেছেন, আজ জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী উত্থাপিত ২০২১-২২ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে ঋণনির্ভর ও গতানুগতিক। বিশাল অংকের ঋণনির্ভর এ বাজেটে সাধারণ জনগণের জন্য ভালো কিছু নেই। ৬ লক্ষ ৩ হাজার ৬৮১কোটি টাকার প্রস্তাবিত এ বাজেটে ২ লক্ষ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকার বিশাল অংকের ঘাটতি রয়েছে এ ঘাটতি মেটাতে দেশ-বিদেশ থেকে চড়া সূদে ঋণ নিতে হবে ২ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে ৩ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, যা কোন ভাবেই অর্জন সম্ভব নয়। কারণ গত বছরও এ পরিমাণ রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো কিন্তু বিগত দশ মাসে মাত্র ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।

আজ (২ জুন) বুধবার দুপুরে দলের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মোঃ আব্দুল জলিল স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো ২০২১-২২ অর্থবছর বাজেট জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাবের পর গণমাধ্যমে দেয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।

মাওলানা ইসহাক বলেন, ঋণনির্ভর এ বাজেটে শুধু সূদ প্রদানে ৬৯ হাজার কোটি টাকা (১১.৪%) ব্যয় হবে। বৈদেশীক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৯৭ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। আর দেশীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা সরকার ঋণ নিলে বেসরকারী ও ব্যক্তিগত খাতে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাঁধাগ্রস্থ হবে। অন্যদিকে জনগণের উপর জাতীয় ঋণের বোঝা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন সেক্টরে সীমাহীন লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে জনগণের ট্যাক্স-ভ্যাটের অর্থ চলে যায় দুর্নীতিবাজদের হাতে। আর বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখে দুর্নীতিকে আরো উৎসাহিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় গত বছরও বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল রাখা হয়েছিলো কিন্তু এ বছর করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় আইসিইউ সংকটসহ নানা সমস্যা প্রমান করেছে স্বাস্থ্য খাতে কোন অগ্রগতি হয়নি। ইতোমধ্যেই করোনার টিকা দান কর্মসূচী হোঁচট খেয়েছে। নতুন কয়েক কোটি বেকার ও দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য সরকারের বিশেষ কোন উদ্যোগ নেই।

তিনি আরো বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জনগণের উপর অতিরিক্ত করের বোঝা বলবৎ রয়েছে। এ বাজেটে সাধারণ জনগণের কোন কল্যাণ হবে না। এ বাজেট জনগণের কাছে কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য হবে না। প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ১৫% আয়কর আরোপ করা হয়েছে, যা মূলত শিক্ষার্থীদেরকেই বহন করতে হবে। করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রাইভেট কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেখানে অস্তিত্বের সংকটে সেখানে এই করারোপ অগ্রহনযোগ্য। বেসরকারী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর করারোপের প্রস্তাব বাতিল করতে হবে। এ ছাড়া বাজেটে মোবাইল সিম ব্যবহারের করে সেবা গ্রহণের বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ১০% থেকে বাড়িয়ে ১৫% নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে মোবাইল ফোনে কথা বলা, বর্তা পাঠানো ও ডেটা ব্যবহারের খরচ বেড়ে যাবে। মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপর আরোপিত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে।

বিস্তারিত পড়ুন

সম্পর্কিত পোস্ট

Back to top button
error: Content is protected !!