মগবাজার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন উপস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান
রাজধানীর মগবাজারে ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন দাবানল শিল্পীগোষ্ঠীর প্রধান উপস্থাপক তরুণ আলেম, উপস্থাপক ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কর্মী মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তিনি রেডিও ধনিতে ‘আহকামুল জুমা’ ও রেডিও একাত্তরে জীবন ঘনিষ্ঠ প্রশ্ন উত্তর মূলক অনুষ্ঠান ‘ইসলাম ও আমরা’ -এর সঞ্চালনা করতেন।
সন্ধ্যায় মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় গুরুতর আহত হন মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান। দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিট ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি। তরুণ এই আলেম উপস্থাপতের ইন্তেকালের খবরে নেটিজেনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ইতোমধ্যেই তাকে মেনশন করে অনেকেই তিনিসহ দুর্ঘটনায় নিহত সবার রুহের মাগফেরাত কামনা করেছেন।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমানসহ এখন পর্যন্ত মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের সবার পরিচয় জানা যায়নি। এছাড়াও আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিট এবং আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মগবাজার ওয়্যারলেস এলাকায় তিনতলা ভবনের নিচতলায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিকট শব্দের পর ওই এলাকা কেঁপে ওঠে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এটা নাশকতা কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, নাশকতা হলে সেখানে স্প্লিন্টার পাওয়া যেত, বোমার বিস্ফোরণ হতো। স্প্লিন্টারের আঘাতে মানুষ ক্ষতবিক্ষত হতো কিন্তু বাসে কোনো স্প্লিন্টারের কণা পাওয়া যায়নি। অতএব নিশ্চিতভাবে বলা যায় গ্যাস থেকেই বিস্ফোরণ ঘটেছে, বোমার কোনো ঘটনা এখানে নাই।
জানা গেছে, ভবনটির নিচতলায় সিঙ্গার শো-রুম, শর্মা হাউস ও গ্র্যান্ড কনফেকশনারি দোকান রয়েছে। বিস্ফোরণে ভবনের ধসে পড়েছে। এ ছাড়া সিঙ্গার শো-রুমের ভেতর থেকে জেনারেটর উড়ে এসে রাস্তায় বাসে পড়ে। এতে দুটি বাসের কাচসহ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় দগ্ধ ৩৯ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিস্ফোরণের এ ঘটনায় পথচারীসহ অন্তত অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। দগ্ধ ও আহতদের মধ্যে ১৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আরও জানা গেছে, ভয়াবহ এই বিস্ফোরণে আশেপাশের বেশ কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিস্ফোরণের ভবনটির উল্টো পাশে (উত্তর) আড়ং এর ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবনটির গ্লাস ভেঙে পড়েছে। এ ঘটনায় দগ্ধ ৪৬ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার এরশাদ হোসেন বলেন, প্রথমে আমরা ওই ভবনে এসি বিস্ফোরণ হওয়ার খবর পাই। পরে আবার অনেকে ফোন করে জানিয়েছেন, গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছে।