রবের কাছে পূর্ণ সমর্পিত হয়ে নতুন বছর শুরু হউক
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান বলেছেন, বছর ঘুরে আবারও মুমিনের দুয়ারে কড়া নাড়ছে পবিত্র মহররম। ত্যাগের মাস জিলহজ এখন বিদায়ের পথে। মুমিনের কাছে হাজির হচ্ছে এবার আরেকটি বরকতপূর্ণ মাস। আরবি মাসের প্রথম মাস মহররম। এ মাস যেমন ফজিলত ও বরকতময় তেমনি শোক ও বিরহগাঁথার মাসও বটে। পবিত্র কোরআনে এ সম্পর্কে বলেছে, এ মাস আরবাআতু হুরুম অর্থ্যাৎ চার সম্মানিত মাসের অন্যতম। আজ (৬ আগষ্ট) শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জুমার বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।
খতিব বলেন, হাদিসে একে আল্লাহর মাস আখ্যা দিয়ে রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মাসে রোজা রাখার ফজিলত বর্ণনা করেছেন।হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘রমজানের পর আল্লাহর মাস মুহাররমের রোজা হল সর্বশ্রেষ্ঠ।’ সহীহ মুসলিম ২/৩৬৮; জামে তিরমিযী ১/১৫৭ এ মাসে পৃথিবীর বহু ঐতিহাসিক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এদিনে আল্লাহ তায়ালা তাঁর কুদরত প্রকাশ করেছেন। বনি ইসরাইলের জন্য সমুদ্রে রাস্তা বের করে দিয়েছেন এবং তাদেরকে নিরাপদে পার করে দিয়েছেন। আর একই রাস্তা দিয়ে ফেরাউন ও তার অনুসারীদেরকে ডুবিয়ে মেরেছেন। সহীহ বুখারী ১/৪৮১ জামে তিরমিযী ১/১৫৭। এ মাসের একটি ঘটনা শাহাদাতে হুসাইন রা.। হযরত হুসাইন রা.-এর শাহাদাত আমাদেরকে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার ও আত্মত্যাগের শিক্ষাই দেয়। তবে এই শোক সহ্য করা উম্মতের জন্য সহজ নয়। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এরই তো শিক্ষা ‘নিশ্চয়ই চোখ অশ্রæসজল হয়, হৃদয়ব্যথিত হয়, তবে আমরা মুখে এমন কিছু উচ্চারণ করি না যা আমাদের রবের কাছে অপছন্দনীয়।’ (বুখারী : ১২৪১ )। অতএব শাহাদাতে হুসাইন (রা.) কে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অনৈসলামিক কর্মকান্ডে লিপ্ত না হওয়া এবং সব ধরনের জাহেলী রসম-রেওয়াজ থেকে দূরে থাকা প্রত্যেক মুসলিমের অবশ্য কর্তব্য।
খতিব বলেন, করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা হতে উত্তরণের লক্ষ্যে আমাদেরকে বেশি বেশি আল্লাহর দরবারে তওবা-ইস্তিগফার করতে হবে। আল্লাহর কাছে নিজেকে পূর্ণ সমর্পিত করব। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলব, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখব। অবশ্যই মাস্ক পরিধান করব। উদ্ভূত কোন পরিস্থিতিতে পতিত হলে আমরা অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করব। সর্বশেষ মহান আল্লাহর কাছে আমাদের ফরিয়াদ আমরা যেন, আরবি নতুন বছর শুরু করতে পারি রবের কাছে নিজেকে পূর্ণ সমর্পিত করার মাধ্যমে । আমরা যেন সমস্ত হিংসা- বিদ্বেষ, কলুষতা মুক্ত এক নবজীবন গঠন করতে পারি। সর্বোপরি মহান আল্লাহর কাছে আমাদের আকুতি আল্লাহ যেন আমাদেরকে সর্বপ্রকারের মুসিবত, বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করেন। চলমান পরিস্থিতি থেকে আমাদের দেশ-জাতি ও বিশ্বমানবতাকে মুক্তি দান করেন। আমিন।