শর্তসাপেক্ষে মসজিদে নামাজ আদায়ের মেয়াদ বাড়ল

চলামান বৈশ্বিক মহামারী মরণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে চলমান কঠোর লকডাউন ১০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদ নামাজ আদায়ের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ১০ আগস্ট পর্যন্ত আগের জারি করা শর্ত মেনে মসজিদে নামাজ আদায় করতে হবে। আর এসব শর্ত তদারকি করতে মসজিদের ইমাম-খতিব এবং মসজিদ কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (৬ আগস্ট) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। মসজিদ ছাড়াও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় জারি করা স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক ৫ আগস্ট রাত ১২টা হতে ১০ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ২৩ জুলাই জারি করা বিজ্ঞপ্তির অনুবৃত্তিক্রমে দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সব ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আরোপিত বিধিনিষেধ অনুসরণ করার জন্য এবং মসজিদে জামায়াতে নামাজ আদায়ের জন্য আবশ্যিকভাবে নিম্নবর্ণিত শর্তগুলো পালনের জন্য অনুরোধ করা হলো-

ক) মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে এবং মুসল্লিদের অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে; খ) মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সাধারণ অবস্থায়ও সুন্নত ও নফল নামাজ বাসায় আদায় করে ফরজ নামাজ জামায়াতের সঙ্গে মসজিদে আদায় করতেন। বর্তমান করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতিতে প্রত্যেক মুসল্লিকে নিজ নিজ বাসা থেকে ওজু করে, সুন্নত ও নফল নামাজ ঘরে আদায় করে শুধুমাত্র ফরজ নামাজ মসজিদে আদায় করতে হবে এবং ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

গ) মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে পুরো মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে, মুসল্লিদের নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে। ঘ) কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। ঙ) শিশু, বয়োবৃদ্ধ, অসুস্থ ব্যক্তি ও অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামায়াতে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। চ) সংক্রমণ রোধ নিশ্চিত করতে মসজিদের ওজুখানায় সাবান/হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।

ছ) সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। জ) করোনা মহামারির এ বৈশ্বিক মহাবিপদ হতে রক্ষা পেতে বেশি বেশি তওবা, আস্তাগফিরুল্লাহ ও কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে এবং আমাদের করা অন্যায়-অপরাধের জন্য নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। খতিব, ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান/উপাসনালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার এবং সাবান দিয়ে হাত ধোয়াসহ যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। উল্লিখিত নির্দেশনা লঙ্ঘিত হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হলো।

বিস্তারিত পড়ুন

সম্পর্কিত পোস্ট

Back to top button
error: Content is protected !!