স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাদরাসা খুলে দেয়ার আহ্বান বেফাকের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির

শরিয়াহ ও সুন্নাহভিত্তিক চললে অচিরেই চলামান বৈশ্বিক মহামারী মরণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, আল-হাইআতুল উলইয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মুহতামিম মাওলানা মাহমুদুল হাসান। শুক্রবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাদরাসা মসজিদে জুমার বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা মাহমুদুল হাসান বলেন, মাদরাসার পরিবেশ তো ভিন্ন। মাদরাসার ছাত্র তারা রাস্তায় বের হয় না। ঘরে বসে থাকে। তাদের সাথে ঐ ছেলেদের তুলনা হয় না। তারা রাত-দিন নামাজ পড়ে। তারা চোখের পানি ফেলে শেষ রাতে। আল্লাহর কাছে দোয়া করে। এই চোখের পানির জন্যই এই দেশ বেঁচে আছে। আর এসব মাদরাসাকে বন্ধ করে রেখেছে। আর কত আলেম জেলের মাঝে চোখের পানি ফেলছে। এ কারণে দেশের উপর আজাব আসতেছে। সরকার যদি সত্যিই কল্যাণ চায় তাহলে যেনো ইসলাম সবার জন্য সহজ করে দেয়। অন্তত পরীক্ষামূলক চালু করতে পারে। কেননা ইসলাম শুধু ব্যক্তি জীবনের জন্য নয়। ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত ইসলাম চালু করা জরুরি।আত্মা ও শরীরের সম্পর্ক মিলে দেশ। যদি মানুষকে আত্মা বলো, তাহলে তাদের মেনে চলতে হবে। আর তুমি (সরকার) যদি আত্মা হও তাহলে জনগণকে শরীর মানতে হবে। উভয়ের সমন্বয়ে দেশে শান্তি আসতে পারে। আর নয়তো নয়।
তিনি বলেন, বিশ্ব মহামারি করোনার এই কঠিন সময়ে খেটে খাওয়া গরিব মানুষের প্রতি করুণা করতে হবে। তবেই আল্লাহর রহমত আসবে। আল্লাহর রহমত ছাড়া এই বিপদ থেকে মুক্তি অসম্ভব। লকডাউনে যাতে কোনভাবে গরিব মানুষ নির্যাতিত না হয়, সেদিকে প্রশাসনকে গভীরভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ, অত্যাচারিতের কান্নায় আল্লাহর আরশ কেঁপে ওঠে। এই কঠোর লকডাউনেও যেমনিভাবে শারিরীক রোগের চিকিৎসা কেন্দ্র, চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট সবকিছু বিধিনিষেধের আওতাবহির্ভূত রাখা হয়েছে, তেমনি মন ও অন্তরের রোগের চিকিৎসা কেন্দ্র ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ তথা আলেম উলামা ও এ সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান-মাদরাসাগুলোকেও অবিলম্বে খুলে দিয়ে জনসেবা করার সুযোগ দিতে হবে। করোনা থেকে মুক্তির আশায় যেমন চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের নিয়ে পরামর্শের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তেমনি কুরআন বিজ্ঞানীদের সাথে নিয়ে যৌথ পরামর্শ সভার আয়োজন করে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমি মাহমূদুল হাসান, সারাদেশের আলেম সমাজের পক্ষে বলছি, আমাদের ৪০ দিন সময় দিন ইনশাআল্লাহ আল্লাহর ইবাদতের মাধ্যমে মানুষের আত্মা পরিষ্কার করে যাবতীয় শারীরিক রোগ বালাই থেকেও দেশকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশাআল্লাহ। আমরা আপনাদের মহব্বত করি, আল্লাহপাক আপনাদের মহব্বত করেন বলেই দেশ পরিচালনার রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে আপনাদের বসিয়েছেন। অতএব, আপনারা কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করুন। মনে কত কষ্ট-দু:খ, আমি এখানে গত ৪০-৫০ বছরে একটি যুবক বাহিনী তৈরি করেছি, এটা আমি মানুষের কাছেও বলি, এখানেও বলি, তাদের অনেকে বৃদ্ধও হয়ে গেছেন। এমন মানুষও আমি তৈরি করেছি, যারা রাত-দিন বুঝেনি। খাওয়া-দাওয়া দুইদিন যাবত নেই। তবু কারো বাড়িতেই যায়নি। আমি চেয়েছি এ এলাকাটি মডেল হয়ে যাক। আমি চেয়েছি শতকরা ৯৫% যুবক সেজদায় পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করুক। এ সময় তিনি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এর মৃত্যুর সময়ের একটি ঘটনা উল্লেখ করেন। যেখানে সাহাবায়ে কেরামকে নামাজে দাঁড়ানোর কাতারে দেখে তিনি মুচকি হেসেছিলেন।