হামাসের রকেট হামলায় দুই ইসরাইলি নিহত

অবরুদ্ধে গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের ছোড়া রকেটে দুই ইসরাইলি নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১১ মে) আশকালান শহরে কয়েকটি রকেট আঘাত হানে। এতে কিছু বাড়িঘরেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দেশটির সংবাদমাদ্যম হারেৎজ-এর বরাতে এই খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
নিহত দু’জনই নারী। একজনের বয়স ৪০, অপরজনের ৬০ বছর। স্থানীয় ইমরার্জেন্সি সার্ভিস মেগান ডেভডি অ্যাডম-এর পক্ষ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপিকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। অপরদিকে শহরের বারজিলা মেডিক্যাল সেন্টার জানিয়েছে, তারা আহত অন্তত ৭০ জনের চিকিৎসা দিচ্ছে।
সোমবার (১০ মে) থেকে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধা হামাসের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বরাতে আরব নিউজ জানিয়েছে ইসরাইলের নির্বিচার বিমান হামলায় গাজায় বেশ কয়েকজন শিশুসহ অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েকশ। অপরদিকে হামাসের রকেট হামলায় দুই ইসরাইলি নিহত হয়েছেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে দুই শতাধিক রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে এগুলোর বেশিরভাগই আইরন ডোম মিসাইল সিস্টেম প্রতিরোধ করেছে বলে দাবি করেছেন ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জোনাথন কনরিকাস। মঙ্গলবারও ফিলিস্তিনি ভূমি থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট হামলা অব্যাহত রয়েছে। ইসরাইলও বিমান হামলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
হামাসের সামরিক উইং কাসেম ব্রিগেড জানিয়েছে, পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জাররাহ এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের চেষ্টা এবং পবিত্র আল-আকসা মসজিদে ইসরাইলি তাণ্ডবের প্রতিবাদে এসব হামলা চালানো হচ্ছে।
রকেট হামলাকে ইসরাইলের অব্যাহত আগ্রাসন ও বর্বরতার মুখে পাল্টা হিসেবে দেখছে ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলনগুলো। ইসরাইল-বিরোধী এই অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে ‘অপারেশন আল-কুদস সোর্ড’।
পার্সটুডে জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে এবং এর আওতায় ইসরাইল অভিমুখে প্রায় ২৫০টি রকেট নিক্ষেপ করেছে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলো। অভিযান পরিচালনার জন্য তারা একটি জয়েন্ট অপারেশন রুম প্রতিষ্ঠা করেছে।
এ সম্পর্কে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পবিত্র জেরুজালেম আল-কুদস ও সেখানকার জনগণকে মুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে এই অভিযান শুরু হয়েছে।
জয়েন্ট অপারেশন রুম থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পবিত্র আল-আকসা মসজিদে ইহুদিবাদী সেনাদের হামলা ও শেখ জাররাহ শরণার্থী শিবির থেকে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের উচ্ছেদের প্রতিবাদে অপারেশন আল-কুদস সোর্ড শুরু হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা ইসরাইলের অভ্যন্তরে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। হামলা শুরু হয় গাজা সীমান্তের কাছে একটি গাড়িতে রকেটের আঘাতের মাধ্যমে। পরে তেল আবিব শহরের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ব্যাপকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, হামাসের ছোড়া রকেটের আঘাতে ইসরায়েলের বেশ কিছু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে আশকালান শহরে একটি অ্যাপার্টমেন্ট এবং বেইত নেকোফা এলাকায় একটি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরাইলের কয়েকটি সূত্র প্রায় ২৫০টি রকেট হামলার কথা নিশ্চিত করেছে। তবে এগুলোর অধিকাংশই দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম দিয়ে ঠেকিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রগুলো বলেছে, ইসরাইলি বাহিনী গাজার ১৩০টি লক্ষ্যবস্তুর ওপর বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে ১৫ জন হামাস সদস্য নিহত হয়েছেন।