শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপাকসার পদত্যাগ
ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপাকসা। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী তার পদত্যাগপত্র প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসা হলেন মহিন্দা রাজাপাকসার বড় ভাই।
মহিন্দা রাজাপাকসার মুখপাত্র রোহান বিলিবিতা বলেন, ‘নতুন জাতীয় ঐক্য’ সরকার গঠনের লক্ষ্যে ৭৮ বছর বয়স্ক মহিন্দা রাজাপাকসা পদত্যাগ করেছেন।
এপ্রিল থেকে শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সঙ্কট শুরু হয়েছিল। বিভিন্ন দেশের কাছে ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কা নিজেকে ‘অর্থনৈতিক ভাবে দেউলিয়া’ ঘোষণা করে। তারপর থেকেই প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসার ইস্তফার দাবি জোরদার হয়েছিল এই দ্বীপ রাষ্ট্রে।
এদিকে বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোতে সহিংসতার পর কারফিউ জারি করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকেরা বিক্ষোভকারীদের গুরুত্বপূর্ণ একটি অবস্থানে হামলা চালানোর প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
হামলাকারীদের সরিয়ে দিতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও পানি কামান ব্যবহার করে। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়। তবে নিহত হওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসা ও তার ভাই প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপাকসার পদত্যাগ দাবি করে আসছিল।
আজ প্রধানমন্ত্রীর অফিসের বাইরে বিক্ষোভ করার সময় সরকার সমর্থক শত শত বিক্ষোভকারী তাদের ওপর হামলা চালায়।
এপ্রিলে শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সঙ্কট শুরু হয়। বিভিন্ন দেশের কাছে ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কা নিজেকে ‘অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া’ ঘোষণা করে। তারপর থেকেই প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসার ইস্তফার দাবি জোরদার হয়েছিল এই দ্বীপরাষ্ট্রে। দেশের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, ১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতার পর থেকে দেশটি কখনো এমন ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে পড়েনি।
আন্তর্জাতিক ঋণ এবং সুদ মেটাতে চলতি বছরের মধ্যে অন্তত ৬৯০ কোটি ডলার ব্যয় করার কথা শ্রীলঙ্কার। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য থেকে শুরু করে জ্বালানি, কৃষিক্ষেত্রে সারের মতো একাধিক পণ্যের দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। মাসের পর মাস এই অবস্থার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু করে শ্রীলঙ্কার আমজনতা। ট্রেড ইউনিয়নগুলোর সাথে আন্দোলনে সামিল হয় কলকারখানায় লাখ লাখ কর্মী, গণপরিবহণ ব্যবস্থার সাথে যুক্ত কর্মীরাও।
সূত্র : বিবিসি, আল জাজিরা, আনন্দবাজার পত্রিকা