ইসলামে যেসব নারীকে বিয়ে করা হারাম
বিয়ে হল একটি সামাজিক বন্ধন বা বৈধ চুক্তি যার মাধ্যমে দু’জন মানুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বিয়ে ছাড়া কোনো নারী বা পুরুষের পরিপূর্ণতা আসে না। ধর্মীয় বিধান পালনের পাশাপাশি সামাজিক কাজও তৈরি হয় বিয়ের মাধ্যমে। জীবনে বিয়ে-শাদির গুরুত্ব বলার অপেক্ষা রাখে না।
আল্লাহ তাআলা হযরত আদম আ.-কে সৃষ্টি করার পর হজরত হাওয়া আ.-কে তার জীবনসাথিরূপে সৃষ্টি করেন। তাদের বিয়ের মাধ্যমে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করে দেন। সেই ধারাবাহিকতা এখনো পৃথিবীতে চলমান।
তবে সবারই মনে রাখা উচিত, নেককার ঈমানদার স্ত্রী সব সময় স্বামীর অনুগত ও উপকারি হয়। তারা দুনিয়ায় জীবনে স্বামীর জন্য যেমন উপকারি তেমনি পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের জন্যও হয় সহায়তাকারী। এ কারণেই বিয়ের সময় নারী নির্বাচনে সতর্ক থাকার উপদেশ দিয়েছেন হজরত মুহাম্মদ সা.।
তবে বিয়ে যেহেতু শরিয়তের নিয়ম ও বিধি— তাই এক্ষেত্রে শরিয়তের নিয়ম অবশ্যই মান্য করতে হয়। শরিয়ত যেসব নিয়ম-বিধি নির্ধারণ করে দিয়েছে, সেগুলো অনুসরণ না করলে বিয়ে বৈধ হয় না। কিছু নারীকে বিয়ে করা পুরুষের জন্য হারাম। দেখে নেওয়া যাক, কারা সেই নারী-
# মা, এবং ঊর্ধ্বতন সব দাদা-নানার স্ত্রীরা।
# মেয়ে এবং ছেলে ও মেয়ের ঘরের সব নাতনি।
# সহোদরা, বৈপিত্রেয়-বৈমাত্রেয় ফুফু।
# সহোদরা, বৈপিত্রেয়-বৈমাত্রেয় খালা।
# সহোদরা, বৈপিত্রেয়-বৈমাত্রেয় বোন ও তাদের সন্তানাদি।
# সহোদরা, বৈপিত্রেয়-বৈমাত্রেয় ভ্রাতৃকন্যা ও তাদের সন্তানাদি।
# দুধমাতা, তার মাতা, দাদি, নানি—এমনিভাবে ওপরের সব নারী।
# স্ত্রীর মেয়ে, যদি স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস হয়ে থাকে।
# পুত্রবধূ, আপন ছেলের হোক বা দুধছেলের হোক।
# আপন শাশুড়ি ও ওপরে যারা রয়েছে।
# যে মেয়ে অপরের বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ রয়েছে
# স্বীয় ঔরসজাত কন্যাকে বিয়ে করা হারাম। এখানে পৌত্রী, প্রপৌত্রী, দৌহিত্রী, প্রদৌহিত্রী তাদেরও বিয়ে করা হারাম।
# সহোদরা ভগ্নিকে বিয়ে করা হারাম। এমনইভাবে বৈমাত্রেয়ী ও বৈপিত্রেয়ী ভগ্নিকেও বিয়ে করা হারাম।
# পিতার সহোদরা, বৈমাত্রেয়ী ও বৈপিত্রেয়ী বোনকে (ফুফুকে) বিয়ে করা হারাম।
# আপন জননীর সহোদরা, বৈমাত্রেয়ী ও বৈপিত্রেয়ী বোনকে (খালা) বিবাহ করা হারাম।
# ভ্রাতুষ্পুত্রীর সঙ্গেও বিয়ে হারাম, আপন হোক, বৈমাত্রীয় হোক।
# বোনের কন্যা, অর্থাৎ ভাগ্নিকে বিয়ে করা হারাম।
# নিজ স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহের পর সহবাস করার শর্তে ওই স্ত্রীর অন্য স্বামীর ঔরসজাত কন্যাকে বিবাহ করা হারাম।
# দুই বোনকে বিবাহের মাধ্যমে একত্র করা অবৈধ, সহোদর বোন হোক কিংবা বৈমাত্রেয়ী বা বৈপিত্রেয়ী হোক, বংশের দিক থেকে হোক বা দুধের দিক থেকে হোক- এ বিধান সবার জন্য প্রযোজ্য। তবে এক বোনের চূড়ান্ত তালাক ও ইদ্দত পালনের পর কিংবা মৃত্যু হলে অন্য বোনকে বিবাহ করা জায়েজ।